Home
#878 (no title)
আত্মহত্যা থেকে বাঁচতে দরকার ইসলামিক শিক্ষা।
আসসালামু আলাইকুম।আমার এই পোস্টটি সময়োপযোগী একটি পোস্ট।৫ মিনিট সময়ব্যায় করে আশাকরি সবাই পড়বেন।প্রেম করা হারাম কিন্তু আমি যে ওকে ভিষণ ভালোবাসি।কেউ যদি এখন হাতভর্তি গোলাপ এনে বলে ভালোবাসি,ভালোবাসি,খুব ভালোবাসি।তুমি চাইলে এনে দিতে পারি আকাশের ঐ মেঘমালা রৌদ্দুর। পাড়ি দিতে পারি একলা সমুদ্দুর। তুমি চাইলে নদী হয়ে বয়ে যাবো পাড়ি দিব দুর্গম সব পর্বতমালা। তুমি কি হবে আমার সারাবেলা?”কৈশরি “যদি এমন আবেগমাখা ভালোবাসা নিয়ে কিশোরির দুয়ারে গেলে অনেক কিশোরির পক্ষে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়না।কৈশরের কৌতূহল,নতুন হরমনের সৌতধারা,বাঁধ ভাঙ্গা আবেগের বাতাস তখন চারদিক থেকে ঘিরে ধরে।তখন কিশোর,কিশোরি এক অন্ধকার জগতে পা বাড়ায়।এর শেষ পরিণতি কি হবে তা তাদের জানা নেই।দ্বীনহীনদের ক্ষেত্রেই শুধু এটা ঘটে না। দ্বীনদার পরিবারের সন্তানদের ক্ষেত্রে ও এটা ঘটে থাকে।প্রেম করা হারাম।তারা যা করছে সেটা ভুল, সেটা যিনাএসব জেনে ও তারা নিজের মন আর আবেগের কাছে হার মানে।শারিরিক চাহিদা ও মানব জীবনে খাবারের মতই নিত্যপ্রয়োজনীয় একটা বিষয়।যদি বৈধভাবে ব্যাবস্হা না করা হয় তখন অবৈধভাবে এসব করে বেড়াবে।শুধু নীতি কথা বলে এসব বন্ধ করা যাবে এই উসুলে আমি বিশ্বাসী না।কারণ ইসলাম বাস্তব সমস্যার সমাধান না দিয়ে কখনো নীতি কথা শুনিয়ে সমাধান দেয়নি।আপনি যদি লক্ষ করেন তাহলে দেখবেন ইসলামে বিয়ের কথা অনেক গুরুত্বের সাথে বলা হয়েছে।অভিবাবকদের এই ব্যাপারে গুরুত্বের সাথে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহহীন তাদের বিবাহ করিয়ে দাও।বয়সসন্ধি কালে কিশোর কিশোরির মনে নতুন আবেগ জাগ্রত হবে।একটা সঙ্গির জন্য মন আনচান করবে এটাই স্বাবাবিক।আদম আলাইহিস সালাম জান্নাতের সবকিছু পেয়ে ও কিছু একটা নাই ফিল করেছিলেন।নিজেকে অপূর্ণ মনে হতো।তখন তার বাম পাজরের হাঁড় দিয়ে তৈরি করে জীবনসঙ্গীনী দেওয়া হলো।একটু ভাবুন জান্নাতের সব নেয়ামত পাওয়ার পর ও আদম (আঃ) এর জীবন সঙ্গিনী প্রয়োজন ছিলো, তাহলে পৃথিবীতে আমাদের এর প্রয়োজন অনেক বেশি।সঙ্গির সাথে শুধু শারিরীক সম্পর্ক ব্যাপারটা মোটেও এমন নয়।মানসিক প্রশান্তি দূর করার জন্য ও সঙ্গিনী প্রয়োজন।আল্লাহ্ মানুষের জন্য সঙ্গিনী বানিয়েছেন যাতে তারা পেতে পারে প্রশান্তি,ভালোবাসা আর দয়া মায়া।আরেক নির্দশন এই যে ” তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের জন্য সঙ্গিনী ঠিক করেছেন। যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রতি ও দয়াময়া সৃষ্টি করেছেন”(সূরা রুম:২১)।কৈশর কালেই এই বিষয় গুলো খুব প্রয়োজন। কারণ যৌবনে অনেক শাররিক চাহিদা থাকে আর ভালোবাসা পেতে ইচ্ছা হয়।এই যৌবন কতক্ষণ?১৫-৩০ বছর।মাত্র ১৫ বছর থাকে এই যৌবন।এই মুুহুর্তে যদি আপনি নীতি কথা বলে তাদের পবিত্র থাকতে বলেন,কারো কারোরো ক্ষেতে সম্ভব হলে ও অনেকের কাছে তা অসম্ভব।লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম করে যাবে তারা।ছেলে-মেয়েদের ফ্রি মিক্মিং য়ের সমাজ। স্কুল কলেজ কোচিং একসাথেই পড়ে।এমনিতে এই বয়সে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বেশি থাকে তার উপরে আবার ক্লাস রুমে তাদের ৮-১০ ঘন্টা একসাথে রেখে আপনি যদি বলেন প্রেম করারা হারাম,নীতি বাক্য শুনান, প্রেম করিও না এসব বলেন তাহলে আপনার কথা মানার জন্য কেউই থাকবে না।প্রেম হলো একপ্রকার রোগ,অন্তরের রোগ।যখন মানুষ প্রেমে পড়ে তখন তার হৃদয় অন্ধ আর বধির হয়ে যায়।প্রেমের আরেকটা দিক হলো মাদকের মতো কাজ করে।মানুষের মন,মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়।তখন সে যদি জানে ও সে ভুল করছে তবু ও সেখান থেকে ফিরে আসতে পারে না।এর কারণে অনেকে আত্নহত্যা পর্যন্ত করে ফেলে।প্রেমের একমাত্র ঔষধ হলো বিয়ে।কিশোর কিশোরির যখন প্রেমে পড়ার সম্ভবনা থাকে বাবা -মায়ের উচিত তাদের বিয়ে দেওয়া।যদি গার্জিয়ান দের দায়িত্ব।ভাই আপনি জানেন প্রেম করা হারাম তবু প্রেম করছেন কেন?আমি জানি আপনি তাকে খুব ভালোবাসেন।আপনি কি চান আপনার কারণে আপনার ভালোবাসার মানুষ আগুন সাগরে জ্বলতে থাকুক?আপনি কি চান আপনার সস্তা এই আবেগ, ভালোবাসার কারণে আপনার ভালোবাসা এবং আপনাদের বাবা-মা যিনা কারী হিসাবে সাব্যস্ত হোক?আপনি চান আপনাদের বাবা-মা ব্যাভিচারিনী হিসাবে আল্লাহর সামনে উপস্হিত হোক?আপনি কি চান দুনিয়ার এই কয়েক বছরের সুখের জন্য আপনার জান্নাতের সুখ নষ্ট হোক?তুমি কি চাও না ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে চিরসুখের জান্নাতে যেতে?আপনি কি চান না আপনার এই ভালোবাসার মানুষ জান্নাতের হুরদের থেকে ও সবচেয়ে আর্কষণীয় আর সুন্দরী হোক?আপনি কি চান না আপনার এই ভালোবাসার মানুষকে প্রথমবার দেখতে?সেখানে প্রথম দেখায় পরস্পর পরস্পরের দিকেকে ৪০বছর কেটে যাবে।তাহলে আপনি কেন হারাম জেনে ও এই হারাম সম্পর্ক টিকিয়ে রাখছেন।আপনার সামনে এখন দুইটা অপশন আছে।১)আপনি তার পরিবারের সাথে কথা বলুন।তাদের কে রাজি করান।আপনার বাবা-মায়ের সাথে কথা বলুন এরপর পারিবারিক ভাবে বিয়ে করুন।প্রথম অপশনটি যদি সম্ভব না হয় তাহলে২)আপনি তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করুন এবং সম্পর্ক ছিন্ন করুন।চিরস্থায়ী ভাবে তাকে বিদায় দিন।কখনোই এই কথা বলবেন না যে আমি জানি প্রেম করা হারাম কিন্তু আমি ওকে ভালোবাসি।আপনার এই ভালোবাসা মিথ্যা।বিয়ে ছাড়া এই ভালোবাসা ধোকা, প্রতারণা।একটা কথা মনে রাখুন আপনার এই ভালোবাসার জন্য আপনার মা-বাবা,আপনার প্রেমিকার মা-বাবা, আপনি এবং আপনার প্রেমিকা সবাই গুনাহগার।দুইটি পরিবারকে আপনার জন্য জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে তাহলে কিভাবে আপনি ভালোবাসা দাবি করছেন?চোখ বন্ধ করে একটু ভাবুন তো আপনার সামনেই আপনার মা-বাবা আগুনে পুড়ছে। আপনি যাকে ভালোবাসেন বলে দাবি করছেন সে ও আগুনে পুড়ে জ্বলছে এবং তার পরিবার ও পুড়ছে। আপনি কি তা সহ্য করতে পারবেন?এক্ষণি এই মুহূর্তে আপনাকে সিন্ধান্ত নিন আপনি কি এই হারাম সম্পর্ক রাখবেন? নাকি বিয়ে করে বৈধ করবেন?আল্লাহ্ সবাইকে বোঝার তৌফিক দান করুন।আমাদেরকে হেদায়েত দান করুন।(আমিন)।
আসসালামুআলাইকুম
আসসালামুআলাইকুম ভাই বিছানায় /খাটের উপরে নামাজ পড়া যাবে কি ?
আসুন জেন নেই
আসুন জেনে নেই
ইমান ও আক্কীদার মানদন্ডে থার্টিফাস্ট নাইট।
গান বাদ্যযন্ত্র সম্পর্কে ইসলাম কি বলে।
ফরিদপুরে এম্বুলেন্সের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৭ জন নিহত।
ফেতরা
মাহরাম কি? – যে সকল পুরুষের সামনে নারীর দেখা দেওয়া,কথা বলা জায়েজ এবং যাদের সাথে বিবাহ বন্ধন সম্পূর্ণ হারাম তাদের কে শরীয়তের পরিভাষায় মাহরাম বলে| . মাহরাম কারা? -সূরা আন নূরের ৩১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা নারীর মাহরাম নির্ধারিত করে দিয়েছেন| পূর্ণ আয়াত টি হল – “আর মুমিন নারীদেরকে বলে দিন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই-এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজেদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরা আন-নূর:৩১) …………বস্তুত পর্দার গুরুত্ব বুঝার জন্য এই একটি আয়াত ই যথেষ্ট! এই আয়াতে আল্লাহ পাক নির্ধারন করে দিয়েছেন – ১. দৃষ্টি নত রাখতে হবে, ২. সম্ভ্রমের হেফাযত করতে হবে, ৩. পর পুরুষের সামনে সৌন্দর্য প্রদর্শন করা যাবেনা, ৪. ওড়নার সঠিক ব্যবহার, ৫. নারীর মাহরাম অর্থাৎ নারী শুধুমাত্র কার কার সামনে যেতে পারবে, ৬. শারীরিক গঠন যাতে বুঝা না যায় তার জন্য নারীরা সজোরে হাঁটবেনা,ধীর গতিতে-ছোট পদক্ষেপে হাঁটবে, ৭. ভুল বশতঃ কোন গুনাহ হয়ে গেলে তওবা করতে হবে| … গায়রে মাহরাম কি? – যে সকল পুরুষের সামনে যাওয়া নারীর জন্য শরীয়তে জায়েজ নয় এবং যাদের সাথে বিবাহ বন্ধন বৈধ তাদের কে গায়রে মাহরাম বলে| বস্তুতঃ গায়রে মাহরামের সামনে একান্ত অপারগ হয়ে যদি যাওয়াই লাগে তবে নারী পূর্ণ পর্দা করে সামনে যাবে| . গায়রে মাহরাম কারা? -মাহরাম বাদে সমস্ত বিশ্বে-মহাবিশ্ব ে যত পুরুষ আছে সব গায়রে মাহরাম! নিজ পরিবারে চাচাত/খালাত/মামাত/ফুপাত সব ভাই, নিজ দুলাভাই, দেবর, ভাসুর, (আপন,দাদা ও নানা শ্বশুর বাদে) সমস্ত চাচা-মামা-খালু- ফুপা শ্বশুর… নিজ খালু/ফুপা এরা সবাই গায়রে মাহরাম! তাদের সামনে নিজেকে প্রদর্শন করা আল্লাহর হুকুমের অবাধ্যতা করা! মাহরাম ছাড়া সকল পুরুষের সামনে পর্দা করতে হবে এবং হবেই… … এক নজরে মাহরাম পুরুষ – ১. স্বামী (দেখা দেওয়া,সৌন্দর্য প্রদর্শনের প্রেক্ষিতে মাহরাম) ২. পিতা, দাদা, নানা ও তাদের উর্ধ্বতন পুরুষগণ। ৩. শ্বশুর, আপন দাদা ও নানা শ্বশুর এবং তাদের উর্ধ্বতন পুরুষগণ। ৪. আপন ছেলে, ছেলের ছেলে, মেয়ের ছেলে ও তাদের ঔরসজাত পুত্র সন্তান এবং আপন মেয়ের স্বামী। ৫. স্বামীর অন্য স্ত্রীর গর্ভজাত পুত্র। ৬. আপন ভাই,সৎ ভাই ৭. ভাতিজা অর্থাৎ, আপন ভাইয়ের ছেলে এবং সৎ ভাইয়ের ছেলে। ৮. ভাগ্নে অর্থাৎ, আপন বোনের ছেলে এবং সৎ বোনের ছেলে। ৯. এমন বালক যার মাঝে মহিলাদের প্রতি কোন আকর্ষণ নেই। (সূরা নূর-৩১) ১০. দুধ সম্পর্কীয় পিতা, দাদা, নানা, চাচা, মামা এবং তাদের উর্ধ্বতন পুরুষগণ। ১১. দুধ ভাই, দুধ ভাইয়ের ছেলে, দুধ বোনের ছেলে এবং তাদের ঔরসজাত যে কোন পুত্র সন্তান। ১২. দুধ সম্পর্কীয় ছেলে, তার ছেলে, দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের ছেলে এবং তাদের ঔরসজাত যে কোন পুত্র সন্তান। এবং দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের স্বামী। (বুখারী শরীফ হাদীস নং ৫০৯৯, মুসলিম শরীফ হাদীস নং ১১৪৪) ১৩. আপন চাচা, সৎ চাচা। ১৪. আপন মামা,সৎ মামা। (সূরা নিসা-২৩) ……………উপরোক্ত পুরুষ যাদের সাথে দেখা করতে বা দেখা দিতে পারবে তারা ছাড়া অন্য সমস্ত পুরুষ কে দেখা দেওয়া সম্পূর্ণ নাজায়েয এবং হারাম। আর উপরোক্ত পুরুষের সাথে বিয়ে সম্পূর্ণ হারাম| .. পর্দা কি? পর্দার পারিভাষিক সংজ্ঞা হল – ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায়,অশ্লীলতা ও ব্যভিচার নিরসনের লক্ষ্যে নারী-পুরুষ উভয়েরই তাদের নিজ নিজ রূপ-লাবণ্য ও সৌন্দর্যকে একে অপর থেকে আড়ালে রাখার জন্য ইসলামে যে বিশেষ ব্যবস্থা অবলম্বন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তাকে হিজাব বা পর্দা বলা হয়। (আল মু‘জামুল ওয়াসীত, ১ম খ-, ১৫৬ পৃষ্ঠা) . ইবনে জাওযীর থেকে বর্ণিত, ইমাম আহমদ (র.) বলেছেন, নারীদের প্রকাশ্য সৌন্দর্য হল কাপড় আর নারীদের শরীরের সবকিছু এমনকি নখও পর্দার অর্ন্তভুক্ত। (যাদুল মাসীর ৬/৩১) ………এ থেকে সহজেই অনুমেয় আমাদের পর্দা কেমন হওয়া উচিৎ! .. “আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। (সূরা আহযাব-৫৩) ……এই আয়াতে প্রমাণ হয় রাসূল (সাঃ) স্ত্রীগণ ও গায়রে মাহরাম থেকে পর্দা করতেন! . আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত, “আমি যখন ঘুমিয়ে ছিলাম তখন সফওয়ান ইবনে মুয়াত্তাল আমাকে দেখে চিনে ফেলল। কেননা সে আমাকে হিজাবেব হুকুম হওয়ার আগে দেখেছিল। তখন সে ইন্নালিল্লাহ বলে উঠল, আমি তার ইন্নালিল্লাহ বলার শব্দে আমি জেগে উঠি তখন আমি ওড়না দিয়ে আমার মুখ ঢেকে ফেলি।” (সহীহ বুখারী ৫/৩২০,সহীহ মুসলিম হাদিস ২৭৭০,জামে তিরমিযী হাদিস ৩১৭৯) …..…এই হাদিস টিও অকাট্য দলিল! . উম্মুল মুমিনীন উম্মে সালমা (রাঃ) বর্ণনা করেন, আমি এবং মাইমুনা (রাঃ) রাসূল (সাঃ) এর কাছে উপস্থিত ছিলাম, এ সময় অন্ধ সাহাবী ইবনে উম্মে মাখতুম (রাঃ) সেখানে আসতে লাগলেন, তখন রাসূল (সাঃ) বললেন তোমরা পর্দা করো,আড়ালে চলে যাও, আমি বললাম ইয়া রাসূলুল্লাহ! তিনি তো অন্ধ,আমাদের দেখতে পাচ্ছেন না, তখন রাসূল (সাঃ) বললেন তোমরাও কি অন্ধ? তোমরা কি তাকে দেখতে পাচ্ছো না? -(আবু দাউদঃ২/৫৬৮) . দুনিয়ায় থাকা কালেই যিনি জান্নাতের সর্দারনী হওয়ার সুসংবাদ পেয়েছিলেন সেই খাতুনে জান্নাত মা ফাতিমা (রাঃ) এর পর্দার কঠোরতা দেখে অবাক না হয়ে পারা যায়না!! মৃত্যুর পূর্বেই তিনি বলে গেছেন – “আমাকে যেন রাতের আঁধারে দাফন করা হয়,কারন আমি চাইনা দিনের আলোতে আমার শরীরের দৈর্ঘ-প্রস্থ কেউ দেখুক!” .. হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আমি আমার সে ঘরে প্রবেশ করতাম যেখানে রাসূল (সাঃ) শুয়ে আছেন, তখন আমি আমার বড় চাদর খুলে রাখতাম আর ভাবতাম ইনি হলেন আমার স্বামী আর অপরজন আমার পিতা| পরে যখন হযরত উমর (রাঃ) কে এই ঘরে দাফন করা হল, আল্লাহর কসম আমি কখনো পুরো শরীর কাপড়ে না ঢেকে সেখানে প্রবেশ করিনি উমর (রাঃ) কে লজ্জা করার করনে| -(মুসনাদে আহমাদ,মিশকাতঃ১৬৭৪) ………মৃত ব্যক্তির সাথেও যেখানে এত কঠোর পর্দা সুতরাং আমাদের পর্দা কেমন হওয়া উচিৎ তা না বুঝার কথা নয়! … নারী পর্দার সাথে বাইরে বের হলেও সাথে মাহরাম পুরুষ থাকা জরুরী| আর দূরে সফরের ক্ষেত্রে এটি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে হাদিসে মাহরাম পুরুষ ছাড়া নারী কে বের হতেই নিষেধ করা হয়েছে! ………আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “মহান আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি যে নারী ঈমান রাখে,তার মাহরামের সঙ্গ ছাড়া একাকিনী এক দিন ও এক রাতের দূরত্ব সফর করা বৈধ নয়|” (বুখারীঃ১০৮৮,মুসলিমঃ১৩৩৯, তিরমিযীঃ১০৭০, আবু দাউদঃ১৭২৩,ইবনে মাজাঃ২৮৯৯) …. আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাকে,আমার বোন কে সহ সকল বোনদের কে পূর্ণ পর্দা করার তওফিক দান করুন এবং গায়রে মাহরামের ফিতনা থেকে হেফাযত করুন… ____ সংগ্রহ
মুনাজাত কিভাবে করতে হয়? ‘মুনাজাত’ শব্দের অর্থ হচ্ছে কারো সাথে চুপিচুপি বা গোপনে কথা বলা। মুনাজাত করার নিয়মঃ (১) যেকোন সময় মুনাজাত করা যায়, দিনে রাতে, দাঁড়ানো অবস্থায়, শুয়ে-বসে, ওযু ছাড়া বা ওযু করে, এমনকি গোসল ফরয এমন অবস্থায়, অথবা নারীদের ঋতু অবস্থাতেও মুনাজাত বা দুয়া করতে পারবেন। তবে ফরয সালাতের পরপরই হাত দুই তুলে মুনাজাত করবেন না। মসজিদে ফরয সালাতের পরে সম্মিলিতভাবে যেই মুনাজাত পড়ানো হয়, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এইভাবে সম্মিলিত মুনাজাত কোনদিন করেননি, বরং এটা একটা বিদআ’ত। সেইজন্য পাঁচ ওয়াক্ত ফরয সালাতের সালাম ফেরানোর পরে কিছু ‘সুন্নতী’ যিকির আযকার আছে, প্রথমে সেই যিকির ও দুয়াগুলো করে এর পরে ইচ্ছা হলে ‘একাকী’ হাত তুলে মুনাজাত করতে পারেন। অথবা ফরয, সুন্নত সব সালাত শেষ করে এরপরে মুনাজাত করবেন। উত্তম হচ্ছে সালাতের পরে নয়, বরং সালাতের ভেতরেই বিভিন্ন স্থানে (যেমন সিজদাতে, দুই সিজদার মাঝখানে, দুয়া মাসুরাসহ এমন সাতটি জায়গা আছে সালাতের ভেতরে, যেখানে দুয়া করা যায়), সেই জায়গাগুলোতে দুয়া করা। কারণ সালাতের ভেতরের দুয়াগুলো বেশি কবুল হয় ও আল্লাহ পছন্দ করেন। আল্লাহ বলেন, “তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করো।” উল্লেখ্য, অনেকে মনে করেন সালাতের পরে মুনাজাত করতেই হবে। এটা ঠিক নয়, সালাতের পরে আপনার ইচ্ছা হলে মুনাজাত করবেন, ইচ্ছা না হলে করবেন না, আপনার ব্যক্তিগত ইচ্ছা। মুনাজাত করা সালতের কোন অংশ নয়। সালাম ফেরানোর মাধ্যমেই আপনার সালাত শেষ হয়ে যায়। (২) ওযু অবস্থায় পশ্চিম দিকে ফিরে দুয়া করা মুস্তাহাব বা উত্তম। তবে এটা ফরয কিংবা জরুরী নয়। ওযু ছাড়াও এবং পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ, যেকোন দিকে ফিরেও মুনাজাত করা যায়। (৩) মুনাজাতের সময় দুই হাত তোলা মুস্তাহাব। আল্লাহ এটা পছন্দ করেন যে তাঁর বান্দা-বান্দীরা ভিক্ষুকের মতো তাঁর সুমহান দরবারে অত্যন্ত বিনীতভাবে কাকুতি-মিনতি সহকারে দুই হাত তুলে আন্তরিকভাবে দুয়া করবে। এইভাবে দুয়া করলে আল্লাহ খুশি হন এবং সেই দুয়া কবুল করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের রব লজ্জাশীল ও দানশীল। তাঁর বান্দা যখন তাঁর নিকট দুই হাত তুলে প্রার্থনা করে, তখন তিনি তাদেরকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন।” তিরমিযী, আবু দাউদ, বুলুগুল মারামঃ ১৫৮১। (৪) মুনাজাতের সময় হাত তোলার নিয়মঃ আল্লামাহ বাকর বিন আবু যাইদ রহি’মাহুল্লাহ বলেন, “মুনাজাতকারী তার দুই হাত বাহু বরাবর বা তার কাছাকাছি এমনভাবে উঠাবে যেন তার দুই হাত মিলিত অবস্থায় থাকে, দুই হাতের মাঝখানে কোন ফাঁক না থাকে। হাতের তালু আকাশের দিকে থাকে এবং হাতের পিঠ যমীনের দিকে। চাইলে উভয় তালু চেহারার সম্মুখে রাখবে এবং হাতের পৃষ্ঠদেশ কিবলামুখী করবে এবং দুই হাত যেন পাক-সাফ থাকে, খোলা থাকে কোনো কিছু দ্বারা আবৃত না থাকে।” তাসবীহুদ-দুয়াঃ ১১৫-১১৬, ফাতহুল বারীঃ ২/৫১৭-৫১৮, শারহুল আযকারঃ ৭/২৪৭। (৫) মুনাজাত করতে হবে বিনীত ভাবে, নিচু স্বরে, মনে এই দৃঢ় আশা ও প্রত্যয় নিয়ে যে, আল্লাহ সমস্ত বিষয়ের উপরে ক্ষমতাবান এবং তিনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন, সুতরাং নিশ্চয়ই তিনি আমার দুয়া কবুল করবেন। “আমি এতো পাপী আল্লাহ আমার দুয়া করবেন কিনা? আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন, নাকি করবেন না? মনে এইরকম কোন সন্দেহ নিয়ে অথবা আল্লাহ আমার দুয়া কবুল করবেন না, আমাকে মাফ করবেন না” – আল্লাহ সম্পর্কে এমন খারাপ ধারণা নিয়ে দুয়া করলে আল্লাহ সেই দুয়া সত্যিই কবুল করেন না। বান্দা যতই পাপী বা অন্যায়কারী হোক না কেনো, সে আন্তরিকভাবে তোওবা করে জান্নাতুল ফিরদাউসের আশা রেখেই দুয়া করবে, বিপদ যত বড়ই হোক আল্লাহ সব ইচ্ছা পূরণ করতে পারেন, এই আশা নিয়েই দুয়া করতে হবে। আর যেই দুয়া করা হচ্ছে সেইদিকে মনোযোগ রেখে, বুঝে শুনে আল্লাহর কাছে চাইতে হবে। উদাসীন হয়ে বা অন্তর থেকে না চেয়ে শুধু মুখে যন্ত্রের মতো বা তোতাপাখির মতো উচ্চারণ করে গেলে, বা আন্তরিক দুয়া না করে লোক দেখানো দুয়া করলে, আল্লাহ সেই দুয়া কবুল করেন না। মনে আশা ও ভয় নিয়ে মনোযোগীতার সহিত কান্নাকাটি করে দুয়া করলে আল্লাহ অত্যন্ত খুশি হন এবং বান্দার দুয়া কবুল করেন। (৬) মুনাজাতের প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা দিয়ে শুরু করা উচিত। আল্লাহর প্রশংসা এভাবে করা যেতে পারে التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ، وَالصَّلَواتُ، وَالطَّيِّباتُ، উচ্চারণঃ আত্তাহি’য়্যা-তু লিল্লা-হি ওয়াস-সালাওয়া-তু ওয়াত্তয়্যিবা-ত। অর্থঃ সমস্ত অভিবাদন, সকল সালাত ও পবিত্র কাজ শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য। অথবা, এটা বলেও আল্লাহর প্রশংসা করা যাবে, الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ উচ্চারণঃ আলহা’মদুলিল্লাহি হা’মদান কাসীরান ত্বায়্যিবান মুবা-রাকান ফীহ। অর্থঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যে প্রশংসা পবিত্রতা ও বরকতপূর্ণ। অথবা এটা বলে আল্লাহর প্রশংসা করা যাবে – الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ উচ্চারণঃ আলহা’মদু লিল্লাহি রাব্বিল আ’লামিন। অর্থঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক। এভাবে এক বা একাধিক আল্লাহর জন্য প্রশংসামূলক বাক্য দ্বারা মুনাজাত শুরু করা উত্তম। (৭) আল্লাহর প্রশংসার পরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দুরুদ ও শান্তির জন্য দুয়া পড়তে হবে। সহীহ হাদীসে বর্ণিত ছোট-বড় যেকোন দুরুদ পড়া যাবে, আপনার যেটা ভালো লাগে সেটা পড়বেন। সর্বোত্তম দুরুদ হচ্ছে দুরুদে ইব্রাহীম, যেটা আমরা সালাতে পড়ি। এটা না পড়ে ছোট অন্য দুরুদও পড়া যাবে। যেমন- اللَّهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ عَلَى نَبَيِّنَا مُحَمَّدٍ উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা সল্লি ওয়া সাল্লিম আ’লা নাবিয়্যিনা মুহা’ম্মাদ। অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি আমাদের নবী মুহাম্মাদের উপর সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন। সহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীবঃ ১/২৭৩। একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম দেখলেন, এক ব্যক্তি দুয়া করছে কিন্তু সে দুয়াতে আল্লাহর প্রশংসা ও রাসুলের প্রতি দরূদ পাঠ করেনি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে লক্ষ্য করে বললেন, “সে তাড়াহুড়ো করেছে।” অতঃপর সে আবার প্রার্থনা করল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে অথবা অন্য কাউকে বললেন, “যখন তোমাদের কেউ দুয়া করে তখন সে যেন প্রথমে আল্লাহ তাআ’লার প্রশংসা ও গুণগান দিয়ে দুয়া শুরু করে। অতঃপর রাসুলের প্রতি দুরুদ পাঠ করে। এরপর তার যা ইচ্ছা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে।” আবু দাউদঃ ১৪৮১, তিরমিজীঃ ৩৪৭৭, শায়খ আলবানীর মতে হাদীসটি সহীহ। (৮) এর পরে নিজের পছন্দমতো নিজের জন্য ও অন্যের জন্য, দুনিয়া বা আখেরাতের যেকোন কল্যানের জন্য দুয়া করতে হবে। প্রথমে নিজের গুনাহ মাফের জন্য, নিজের দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যানের জন্য দুয়া করতে হবে। এরপর নিজের বাবা-মা, নিজ পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও অন্য মুসলমান পুরুষ ও নারীদের জন্য দুয়া করা ভালো। সবচাইতে কম কথায় সবচাইতে বেশি প্রার্থনা করার এই দুয়াটা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম খুব বেশি বেশি করতেন। “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অধিকাংশ দুয়া হতঃ رَبَّنَآ اٰتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَّفِي الْاٰخِرَةِ حَسَـنَةً وَّقِنَا عَذَابَ النَّارِ উচ্চারণঃ রব্বানা আ-তিনা ফিদ্দুনিয়া হা’সানাতাওঁ-ওয়াফিল আ-খিরাতি হাসানাতাওঁ ওয়া-ক্বিনা আ’যাবান-নার। অর্থঃ হে আল্লাহ! আমাদেরকে দুনিয়ার জীবনে কল্যাণ দাও এবং পরকালে জীবনেও কল্যাণ দান করো। আর আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে বাঁচাও। বিঃদ্রঃ এই দুয়াটা “আল্লাহুম্মা আতিনা…” বা “রাব্বানা আতিনা…”, এই দুইভাবেই পড়া যায়। এছাড়া নিজের জীবিত/মৃত পিতা-মাতার জন্য এই দুয়া সর্বদা বেশি করে পড়তে হবেঃ رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا উচ্চারণঃ রব্বির হা’ম-হুমা কামা রাব্বা ইয়ানি সগিরা। অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি আমার পিতা-মাতার প্রতি তেমনি দয়া করো, যেইরকম দয়া তারা আমাকে শিশু অবস্থায় করেছিল। (৯) আরবী বা বাংলায় যেকোন ভাষাতেই মুনাজাত করা যায়, আল্লাহ সকল ভাষাই বোঝেন। তবে সালাতের ভেতরে উত্তম হচ্ছে ক্বুরআন ও হাদীসের দুয়াগুলো আরবীতে মুখস্থ করে সেইগুলো দিয়েই দুয়া করা। যেমন রিযক বা টাকা-পয়সা, রোগ থেকে মুক্তি বা সুস্থতা এমন অনেকগুলোর জন্য এই দুয়াটি দুই সিজদার মাঝখানে, সিজদাতে সিজদার তাসবীহ পড়ার পরে বা দুয়া মাসুরা হিসেবে পড়লেই হবে, اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي، وَارْحَمْنِي، وَاهْدِنِي، وَاجْبُرْنِي، وَعَافِنِي، وَارْزُقْنِي، وَارْفَعْنِي উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মাগফিরলী, ওয়ারহা’মনী, ওয়াহদিনী, ওয়াজবুরনী, ওয়াআ’ফিনি, ওয়ারযুক্বনী, ওয়ারফা’নী। অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, আমার প্রতি দয়া করুন, আমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন, আমার সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি পূরণ করে দিন, আমাকে নিরাপত্তা দান করুন, আমাকে রিযিক দান করুন এবং আমার মর্যাদা বৃদ্ধি করুন। আবু দাউদঃ ৮৫০, তিরমিযী ২৮৪, ইবন মাজাহঃ ৮৯৮। শায়খ আলবানীর মতে হাদীসটি সহীহ। উল্লেখ্য, সালাতের ভেতরে দুয়া করলে হাত তুলতে হবেনা, কারণ তখনতো আপনি সালাতে মাঝেই আছেন। সিজদায় গিয়ে প্রথমে সিজদার তাসবীহ পড়বেন, এর পরে অন্য দুয়া করতে পারবেন। আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী যেকোন সিজদাতেই দুয়া করতে পারবেন, নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নেই। আরবী ভাষা না জানলে নফল ও সুন্নত সালাতে বাংলা বা অন্য ভাষাতে দুয়া করা যাবে, ইন শা আল্লাহ, কোন সমস্যা নেই। তবে সতর্কতাবশত ফরয সালাতে অন্য ভাষায় দুয়া না করে শুধুমাত্র আরবী দুয়াগুলো করাই নিরাপদ। (১০) দুয়া করা শেষ হলে ‘আমিন’ অথবা ‘আমিন ইয়া রাব্বাল আ’লামীন’ বলবেন। আমীন অর্থ হচ্ছে, “হে আল্লাহ তুমি আমার দুয়া কবুল করো”। (১১) সর্বশেষ, পুনরায় নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দুরুদ পড়ে ও আল্লাহর প্রশংসা দিয়ে মুনাজাত শেষ করবেন। (১২) দুয়া শেষে হাত দিয়ে মুখ মোছা নিয়ে কোন একটি ‘সহীহ’ হাদীস নেই। ইমাম মুহাম্মাদ নাসির উদ্দীন আলবানী রহি’মাহুল্লাহ বলেছেন, “মুখে হাত মোছা নিয়ে যেই হাদিসগুলো এসেছে তার একটাও সহীহ নয়।” একারণে একজন প্রখ্যাত হানাফী আলেম, ইমাম ই’জ্জ ইবনে আব্দুস সালাম রহি’মাহুল্লাহ এই কাজের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, “একমাত্র জাহেল লোক ছাড়া আর কেউ মুনাজাতের পরে হাত দিয়ে মুখ মোছেনা।” ফাতওয়া ই’জ্জ ইবনে আব্দুস সালামঃ পৃষ্ঠা ৪৭। নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম মুনাজাত শেষে হাত দিয়ে মুখ মুছতেন; এটা বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা প্রমানিত হয়নি। তাই এই কাজ না করাই উত্তম। কারণ ইবাদতের কোন কিছু ক্বুরআন ও সহীহ হাদীসের প্রমান ছাড়া করা যায়না। মুনাজাত শেষ করে আমিন বলে হাত নামিয়ে ফেলবেন। উৎসঃ এই লেখাটা ইমাম আব্দুল আ’জিজ ইবনে বাজ রাহিমাহুল্লাহর একটি ফতোয়ার উপর ভিত্তি করে লেখা। লেখাটির সাথে সহীহ হাদীসের উপর ভিত্তি করে আমি কিছু ব্যখ্যা-বিশ্লেষণ ও অন্যান্য আলেমদের কথা সংযোজন করেছি। আপনারা দুয়া ও মুনাজাত নিয়ে বিস্তারিত জানার জন্য শায়খ আব্দুল হা’মীদ মাদানীর লিখিত “সহীহ দুয়া ঝাড়ফুঁক ও যিকর”, এই বইটা পড়ুন।
যে ব্যক্তি সকালে তিনবার রাতে তিনবার এই দোয়া পাঠ করবে কোনো কিছু তার ক্ষতি করতে পারবে না
যে ব্যক্তি সকালে তিনবার রাতে তিনবার এই দোয়া পাঠ করবে কোনো কিছু তার ক্ষতি করতে পারবে না
সন্মান ও ক্ষমতার মালিক আল্লাহ
সমকামীতা ইসলামে একটি গুরুতর অপরাধ আর সমকামীতার কারণে লুত সম্প্রদায় ধবংস হয়েছে। মহান আল্লাহর সতর্ক বাণী: إِنَّكُمْ لَتَأْتُونَ الرِّجَالَ شَهْوَةً مِنْ دُونِ النِّسَاءِ بَلْ أَنْتُمْ قَوْمٌ مُسْرِفُونَ অবশ্যই তোমরা (পুরুষেরা) পুরুষদের কাছে যৌন ইচ্ছা পূর্ণ করছো নারীদেরকে বাদ দিয়ে বরং তোমরা সীমালংনকারী সম্প্রদায়। (আল-আ‘রাফ, ৭/৮১) أَتَأْتُونَ الذُّكْرَانَ مِنَ الْعَالَمِينَ وَتَذَرُونَ مَا خَلَقَ لَكُمْ رَبُّكُمْ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ بَلْ أَنْتُمْ قَوْمٌ عَادُونَ দুনিয়ার সৃষ্টির মধ্যে তোমরাই কি পুরুষদের কাছে যৌন ইচ্ছা পূর্ণ করছো আর তোমাদের রব তোমাদের জন্যে যে স্ত্রীদেরকে সৃষ্টি করেছেন তোমরা তা বর্জন করছ বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়। (আশ্-শু‘আরা, ২৬/১৬৫-১৬৬) চরিত্রহীন সমকামীদের ব্যাপারে ইসলামের নির্দেশ হলঃ ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, مَنْ وَجَدْتُمُوهُ يَعْمَلُ عَمَلَ قَوْمِ لُوطٍ فَاقْتُلُوا الْفَاعِلَ وَالْمَفْعُولَ بِهِ তোমরা কাউকে লূত জাতির অনুরূপ কুকর্মে লিপ্ত পেলে তাকে এবং যার সাথে তা করা হয় তাকে হত্যা করো। (তিরমিযী, ১৪৫৬, ইবনে মাজাহ ২৫৬১, সহীহ)
তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করো না এবং জেনে শুনে সত্য গোপন করো না।" (সূরা বাকারাঃ আয়াত ৪২)
Entries
RSS
|
Comments RSS
Pages
#878 (no title)
আত্মহত্যা থেকে বাঁচতে দরকার ইসলামিক শিক্ষা।
আসসালামু আলাইকুম।আমার এই পোস্টটি সময়োপযোগী একটি পোস্ট।৫ মিনিট সময়ব্যায় করে আশাকরি সবাই পড়বেন।প্রেম করা হারাম কিন্তু আমি যে ওকে ভিষণ ভালোবাসি।কেউ যদি এখন হাতভর্তি গোলাপ এনে বলে ভালোবাসি,ভালোবাসি,খুব ভালোবাসি।তুমি চাইলে এনে দিতে পারি আকাশের ঐ মেঘমালা রৌদ্দুর। পাড়ি দিতে পারি একলা সমুদ্দুর। তুমি চাইলে নদী হয়ে বয়ে যাবো পাড়ি দিব দুর্গম সব পর্বতমালা। তুমি কি হবে আমার সারাবেলা?”কৈশরি “যদি এমন আবেগমাখা ভালোবাসা নিয়ে কিশোরির দুয়ারে গেলে অনেক কিশোরির পক্ষে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়না।কৈশরের কৌতূহল,নতুন হরমনের সৌতধারা,বাঁধ ভাঙ্গা আবেগের বাতাস তখন চারদিক থেকে ঘিরে ধরে।তখন কিশোর,কিশোরি এক অন্ধকার জগতে পা বাড়ায়।এর শেষ পরিণতি কি হবে তা তাদের জানা নেই।দ্বীনহীনদের ক্ষেত্রেই শুধু এটা ঘটে না। দ্বীনদার পরিবারের সন্তানদের ক্ষেত্রে ও এটা ঘটে থাকে।প্রেম করা হারাম।তারা যা করছে সেটা ভুল, সেটা যিনাএসব জেনে ও তারা নিজের মন আর আবেগের কাছে হার মানে।শারিরিক চাহিদা ও মানব জীবনে খাবারের মতই নিত্যপ্রয়োজনীয় একটা বিষয়।যদি বৈধভাবে ব্যাবস্হা না করা হয় তখন অবৈধভাবে এসব করে বেড়াবে।শুধু নীতি কথা বলে এসব বন্ধ করা যাবে এই উসুলে আমি বিশ্বাসী না।কারণ ইসলাম বাস্তব সমস্যার সমাধান না দিয়ে কখনো নীতি কথা শুনিয়ে সমাধান দেয়নি।আপনি যদি লক্ষ করেন তাহলে দেখবেন ইসলামে বিয়ের কথা অনেক গুরুত্বের সাথে বলা হয়েছে।অভিবাবকদের এই ব্যাপারে গুরুত্বের সাথে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহহীন তাদের বিবাহ করিয়ে দাও।বয়সসন্ধি কালে কিশোর কিশোরির মনে নতুন আবেগ জাগ্রত হবে।একটা সঙ্গির জন্য মন আনচান করবে এটাই স্বাবাবিক।আদম আলাইহিস সালাম জান্নাতের সবকিছু পেয়ে ও কিছু একটা নাই ফিল করেছিলেন।নিজেকে অপূর্ণ মনে হতো।তখন তার বাম পাজরের হাঁড় দিয়ে তৈরি করে জীবনসঙ্গীনী দেওয়া হলো।একটু ভাবুন জান্নাতের সব নেয়ামত পাওয়ার পর ও আদম (আঃ) এর জীবন সঙ্গিনী প্রয়োজন ছিলো, তাহলে পৃথিবীতে আমাদের এর প্রয়োজন অনেক বেশি।সঙ্গির সাথে শুধু শারিরীক সম্পর্ক ব্যাপারটা মোটেও এমন নয়।মানসিক প্রশান্তি দূর করার জন্য ও সঙ্গিনী প্রয়োজন।আল্লাহ্ মানুষের জন্য সঙ্গিনী বানিয়েছেন যাতে তারা পেতে পারে প্রশান্তি,ভালোবাসা আর দয়া মায়া।আরেক নির্দশন এই যে ” তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের জন্য সঙ্গিনী ঠিক করেছেন। যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রতি ও দয়াময়া সৃষ্টি করেছেন”(সূরা রুম:২১)।কৈশর কালেই এই বিষয় গুলো খুব প্রয়োজন। কারণ যৌবনে অনেক শাররিক চাহিদা থাকে আর ভালোবাসা পেতে ইচ্ছা হয়।এই যৌবন কতক্ষণ?১৫-৩০ বছর।মাত্র ১৫ বছর থাকে এই যৌবন।এই মুুহুর্তে যদি আপনি নীতি কথা বলে তাদের পবিত্র থাকতে বলেন,কারো কারোরো ক্ষেতে সম্ভব হলে ও অনেকের কাছে তা অসম্ভব।লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম করে যাবে তারা।ছেলে-মেয়েদের ফ্রি মিক্মিং য়ের সমাজ। স্কুল কলেজ কোচিং একসাথেই পড়ে।এমনিতে এই বয়সে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বেশি থাকে তার উপরে আবার ক্লাস রুমে তাদের ৮-১০ ঘন্টা একসাথে রেখে আপনি যদি বলেন প্রেম করারা হারাম,নীতি বাক্য শুনান, প্রেম করিও না এসব বলেন তাহলে আপনার কথা মানার জন্য কেউই থাকবে না।প্রেম হলো একপ্রকার রোগ,অন্তরের রোগ।যখন মানুষ প্রেমে পড়ে তখন তার হৃদয় অন্ধ আর বধির হয়ে যায়।প্রেমের আরেকটা দিক হলো মাদকের মতো কাজ করে।মানুষের মন,মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়।তখন সে যদি জানে ও সে ভুল করছে তবু ও সেখান থেকে ফিরে আসতে পারে না।এর কারণে অনেকে আত্নহত্যা পর্যন্ত করে ফেলে।প্রেমের একমাত্র ঔষধ হলো বিয়ে।কিশোর কিশোরির যখন প্রেমে পড়ার সম্ভবনা থাকে বাবা -মায়ের উচিত তাদের বিয়ে দেওয়া।যদি গার্জিয়ান দের দায়িত্ব।ভাই আপনি জানেন প্রেম করা হারাম তবু প্রেম করছেন কেন?আমি জানি আপনি তাকে খুব ভালোবাসেন।আপনি কি চান আপনার কারণে আপনার ভালোবাসার মানুষ আগুন সাগরে জ্বলতে থাকুক?আপনি কি চান আপনার সস্তা এই আবেগ, ভালোবাসার কারণে আপনার ভালোবাসা এবং আপনাদের বাবা-মা যিনা কারী হিসাবে সাব্যস্ত হোক?আপনি চান আপনাদের বাবা-মা ব্যাভিচারিনী হিসাবে আল্লাহর সামনে উপস্হিত হোক?আপনি কি চান দুনিয়ার এই কয়েক বছরের সুখের জন্য আপনার জান্নাতের সুখ নষ্ট হোক?তুমি কি চাও না ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে চিরসুখের জান্নাতে যেতে?আপনি কি চান না আপনার এই ভালোবাসার মানুষ জান্নাতের হুরদের থেকে ও সবচেয়ে আর্কষণীয় আর সুন্দরী হোক?আপনি কি চান না আপনার এই ভালোবাসার মানুষকে প্রথমবার দেখতে?সেখানে প্রথম দেখায় পরস্পর পরস্পরের দিকেকে ৪০বছর কেটে যাবে।তাহলে আপনি কেন হারাম জেনে ও এই হারাম সম্পর্ক টিকিয়ে রাখছেন।আপনার সামনে এখন দুইটা অপশন আছে।১)আপনি তার পরিবারের সাথে কথা বলুন।তাদের কে রাজি করান।আপনার বাবা-মায়ের সাথে কথা বলুন এরপর পারিবারিক ভাবে বিয়ে করুন।প্রথম অপশনটি যদি সম্ভব না হয় তাহলে২)আপনি তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করুন এবং সম্পর্ক ছিন্ন করুন।চিরস্থায়ী ভাবে তাকে বিদায় দিন।কখনোই এই কথা বলবেন না যে আমি জানি প্রেম করা হারাম কিন্তু আমি ওকে ভালোবাসি।আপনার এই ভালোবাসা মিথ্যা।বিয়ে ছাড়া এই ভালোবাসা ধোকা, প্রতারণা।একটা কথা মনে রাখুন আপনার এই ভালোবাসার জন্য আপনার মা-বাবা,আপনার প্রেমিকার মা-বাবা, আপনি এবং আপনার প্রেমিকা সবাই গুনাহগার।দুইটি পরিবারকে আপনার জন্য জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে তাহলে কিভাবে আপনি ভালোবাসা দাবি করছেন?চোখ বন্ধ করে একটু ভাবুন তো আপনার সামনেই আপনার মা-বাবা আগুনে পুড়ছে। আপনি যাকে ভালোবাসেন বলে দাবি করছেন সে ও আগুনে পুড়ে জ্বলছে এবং তার পরিবার ও পুড়ছে। আপনি কি তা সহ্য করতে পারবেন?এক্ষণি এই মুহূর্তে আপনাকে সিন্ধান্ত নিন আপনি কি এই হারাম সম্পর্ক রাখবেন? নাকি বিয়ে করে বৈধ করবেন?আল্লাহ্ সবাইকে বোঝার তৌফিক দান করুন।আমাদেরকে হেদায়েত দান করুন।(আমিন)।
আসসালামুআলাইকুম
আসসালামুআলাইকুম ভাই বিছানায় /খাটের উপরে নামাজ পড়া যাবে কি ?
আসুন জেন নেই
আসুন জেনে নেই
ইমান ও আক্কীদার মানদন্ডে থার্টিফাস্ট নাইট।
গান বাদ্যযন্ত্র সম্পর্কে ইসলাম কি বলে।
ফরিদপুরে এম্বুলেন্সের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৭ জন নিহত।
ফেতরা
মাহরাম কি? – যে সকল পুরুষের সামনে নারীর দেখা দেওয়া,কথা বলা জায়েজ এবং যাদের সাথে বিবাহ বন্ধন সম্পূর্ণ হারাম তাদের কে শরীয়তের পরিভাষায় মাহরাম বলে| . মাহরাম কারা? -সূরা আন নূরের ৩১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা নারীর মাহরাম নির্ধারিত করে দিয়েছেন| পূর্ণ আয়াত টি হল – “আর মুমিন নারীদেরকে বলে দিন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই-এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজেদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরা আন-নূর:৩১) …………বস্তুত পর্দার গুরুত্ব বুঝার জন্য এই একটি আয়াত ই যথেষ্ট! এই আয়াতে আল্লাহ পাক নির্ধারন করে দিয়েছেন – ১. দৃষ্টি নত রাখতে হবে, ২. সম্ভ্রমের হেফাযত করতে হবে, ৩. পর পুরুষের সামনে সৌন্দর্য প্রদর্শন করা যাবেনা, ৪. ওড়নার সঠিক ব্যবহার, ৫. নারীর মাহরাম অর্থাৎ নারী শুধুমাত্র কার কার সামনে যেতে পারবে, ৬. শারীরিক গঠন যাতে বুঝা না যায় তার জন্য নারীরা সজোরে হাঁটবেনা,ধীর গতিতে-ছোট পদক্ষেপে হাঁটবে, ৭. ভুল বশতঃ কোন গুনাহ হয়ে গেলে তওবা করতে হবে| … গায়রে মাহরাম কি? – যে সকল পুরুষের সামনে যাওয়া নারীর জন্য শরীয়তে জায়েজ নয় এবং যাদের সাথে বিবাহ বন্ধন বৈধ তাদের কে গায়রে মাহরাম বলে| বস্তুতঃ গায়রে মাহরামের সামনে একান্ত অপারগ হয়ে যদি যাওয়াই লাগে তবে নারী পূর্ণ পর্দা করে সামনে যাবে| . গায়রে মাহরাম কারা? -মাহরাম বাদে সমস্ত বিশ্বে-মহাবিশ্ব ে যত পুরুষ আছে সব গায়রে মাহরাম! নিজ পরিবারে চাচাত/খালাত/মামাত/ফুপাত সব ভাই, নিজ দুলাভাই, দেবর, ভাসুর, (আপন,দাদা ও নানা শ্বশুর বাদে) সমস্ত চাচা-মামা-খালু- ফুপা শ্বশুর… নিজ খালু/ফুপা এরা সবাই গায়রে মাহরাম! তাদের সামনে নিজেকে প্রদর্শন করা আল্লাহর হুকুমের অবাধ্যতা করা! মাহরাম ছাড়া সকল পুরুষের সামনে পর্দা করতে হবে এবং হবেই… … এক নজরে মাহরাম পুরুষ – ১. স্বামী (দেখা দেওয়া,সৌন্দর্য প্রদর্শনের প্রেক্ষিতে মাহরাম) ২. পিতা, দাদা, নানা ও তাদের উর্ধ্বতন পুরুষগণ। ৩. শ্বশুর, আপন দাদা ও নানা শ্বশুর এবং তাদের উর্ধ্বতন পুরুষগণ। ৪. আপন ছেলে, ছেলের ছেলে, মেয়ের ছেলে ও তাদের ঔরসজাত পুত্র সন্তান এবং আপন মেয়ের স্বামী। ৫. স্বামীর অন্য স্ত্রীর গর্ভজাত পুত্র। ৬. আপন ভাই,সৎ ভাই ৭. ভাতিজা অর্থাৎ, আপন ভাইয়ের ছেলে এবং সৎ ভাইয়ের ছেলে। ৮. ভাগ্নে অর্থাৎ, আপন বোনের ছেলে এবং সৎ বোনের ছেলে। ৯. এমন বালক যার মাঝে মহিলাদের প্রতি কোন আকর্ষণ নেই। (সূরা নূর-৩১) ১০. দুধ সম্পর্কীয় পিতা, দাদা, নানা, চাচা, মামা এবং তাদের উর্ধ্বতন পুরুষগণ। ১১. দুধ ভাই, দুধ ভাইয়ের ছেলে, দুধ বোনের ছেলে এবং তাদের ঔরসজাত যে কোন পুত্র সন্তান। ১২. দুধ সম্পর্কীয় ছেলে, তার ছেলে, দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের ছেলে এবং তাদের ঔরসজাত যে কোন পুত্র সন্তান। এবং দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের স্বামী। (বুখারী শরীফ হাদীস নং ৫০৯৯, মুসলিম শরীফ হাদীস নং ১১৪৪) ১৩. আপন চাচা, সৎ চাচা। ১৪. আপন মামা,সৎ মামা। (সূরা নিসা-২৩) ……………উপরোক্ত পুরুষ যাদের সাথে দেখা করতে বা দেখা দিতে পারবে তারা ছাড়া অন্য সমস্ত পুরুষ কে দেখা দেওয়া সম্পূর্ণ নাজায়েয এবং হারাম। আর উপরোক্ত পুরুষের সাথে বিয়ে সম্পূর্ণ হারাম| .. পর্দা কি? পর্দার পারিভাষিক সংজ্ঞা হল – ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায়,অশ্লীলতা ও ব্যভিচার নিরসনের লক্ষ্যে নারী-পুরুষ উভয়েরই তাদের নিজ নিজ রূপ-লাবণ্য ও সৌন্দর্যকে একে অপর থেকে আড়ালে রাখার জন্য ইসলামে যে বিশেষ ব্যবস্থা অবলম্বন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তাকে হিজাব বা পর্দা বলা হয়। (আল মু‘জামুল ওয়াসীত, ১ম খ-, ১৫৬ পৃষ্ঠা) . ইবনে জাওযীর থেকে বর্ণিত, ইমাম আহমদ (র.) বলেছেন, নারীদের প্রকাশ্য সৌন্দর্য হল কাপড় আর নারীদের শরীরের সবকিছু এমনকি নখও পর্দার অর্ন্তভুক্ত। (যাদুল মাসীর ৬/৩১) ………এ থেকে সহজেই অনুমেয় আমাদের পর্দা কেমন হওয়া উচিৎ! .. “আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। (সূরা আহযাব-৫৩) ……এই আয়াতে প্রমাণ হয় রাসূল (সাঃ) স্ত্রীগণ ও গায়রে মাহরাম থেকে পর্দা করতেন! . আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত, “আমি যখন ঘুমিয়ে ছিলাম তখন সফওয়ান ইবনে মুয়াত্তাল আমাকে দেখে চিনে ফেলল। কেননা সে আমাকে হিজাবেব হুকুম হওয়ার আগে দেখেছিল। তখন সে ইন্নালিল্লাহ বলে উঠল, আমি তার ইন্নালিল্লাহ বলার শব্দে আমি জেগে উঠি তখন আমি ওড়না দিয়ে আমার মুখ ঢেকে ফেলি।” (সহীহ বুখারী ৫/৩২০,সহীহ মুসলিম হাদিস ২৭৭০,জামে তিরমিযী হাদিস ৩১৭৯) …..…এই হাদিস টিও অকাট্য দলিল! . উম্মুল মুমিনীন উম্মে সালমা (রাঃ) বর্ণনা করেন, আমি এবং মাইমুনা (রাঃ) রাসূল (সাঃ) এর কাছে উপস্থিত ছিলাম, এ সময় অন্ধ সাহাবী ইবনে উম্মে মাখতুম (রাঃ) সেখানে আসতে লাগলেন, তখন রাসূল (সাঃ) বললেন তোমরা পর্দা করো,আড়ালে চলে যাও, আমি বললাম ইয়া রাসূলুল্লাহ! তিনি তো অন্ধ,আমাদের দেখতে পাচ্ছেন না, তখন রাসূল (সাঃ) বললেন তোমরাও কি অন্ধ? তোমরা কি তাকে দেখতে পাচ্ছো না? -(আবু দাউদঃ২/৫৬৮) . দুনিয়ায় থাকা কালেই যিনি জান্নাতের সর্দারনী হওয়ার সুসংবাদ পেয়েছিলেন সেই খাতুনে জান্নাত মা ফাতিমা (রাঃ) এর পর্দার কঠোরতা দেখে অবাক না হয়ে পারা যায়না!! মৃত্যুর পূর্বেই তিনি বলে গেছেন – “আমাকে যেন রাতের আঁধারে দাফন করা হয়,কারন আমি চাইনা দিনের আলোতে আমার শরীরের দৈর্ঘ-প্রস্থ কেউ দেখুক!” .. হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আমি আমার সে ঘরে প্রবেশ করতাম যেখানে রাসূল (সাঃ) শুয়ে আছেন, তখন আমি আমার বড় চাদর খুলে রাখতাম আর ভাবতাম ইনি হলেন আমার স্বামী আর অপরজন আমার পিতা| পরে যখন হযরত উমর (রাঃ) কে এই ঘরে দাফন করা হল, আল্লাহর কসম আমি কখনো পুরো শরীর কাপড়ে না ঢেকে সেখানে প্রবেশ করিনি উমর (রাঃ) কে লজ্জা করার করনে| -(মুসনাদে আহমাদ,মিশকাতঃ১৬৭৪) ………মৃত ব্যক্তির সাথেও যেখানে এত কঠোর পর্দা সুতরাং আমাদের পর্দা কেমন হওয়া উচিৎ তা না বুঝার কথা নয়! … নারী পর্দার সাথে বাইরে বের হলেও সাথে মাহরাম পুরুষ থাকা জরুরী| আর দূরে সফরের ক্ষেত্রে এটি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে হাদিসে মাহরাম পুরুষ ছাড়া নারী কে বের হতেই নিষেধ করা হয়েছে! ………আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “মহান আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি যে নারী ঈমান রাখে,তার মাহরামের সঙ্গ ছাড়া একাকিনী এক দিন ও এক রাতের দূরত্ব সফর করা বৈধ নয়|” (বুখারীঃ১০৮৮,মুসলিমঃ১৩৩৯, তিরমিযীঃ১০৭০, আবু দাউদঃ১৭২৩,ইবনে মাজাঃ২৮৯৯) …. আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাকে,আমার বোন কে সহ সকল বোনদের কে পূর্ণ পর্দা করার তওফিক দান করুন এবং গায়রে মাহরামের ফিতনা থেকে হেফাযত করুন… ____ সংগ্রহ
মুনাজাত কিভাবে করতে হয়? ‘মুনাজাত’ শব্দের অর্থ হচ্ছে কারো সাথে চুপিচুপি বা গোপনে কথা বলা। মুনাজাত করার নিয়মঃ (১) যেকোন সময় মুনাজাত করা যায়, দিনে রাতে, দাঁড়ানো অবস্থায়, শুয়ে-বসে, ওযু ছাড়া বা ওযু করে, এমনকি গোসল ফরয এমন অবস্থায়, অথবা নারীদের ঋতু অবস্থাতেও মুনাজাত বা দুয়া করতে পারবেন। তবে ফরয সালাতের পরপরই হাত দুই তুলে মুনাজাত করবেন না। মসজিদে ফরয সালাতের পরে সম্মিলিতভাবে যেই মুনাজাত পড়ানো হয়, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এইভাবে সম্মিলিত মুনাজাত কোনদিন করেননি, বরং এটা একটা বিদআ’ত। সেইজন্য পাঁচ ওয়াক্ত ফরয সালাতের সালাম ফেরানোর পরে কিছু ‘সুন্নতী’ যিকির আযকার আছে, প্রথমে সেই যিকির ও দুয়াগুলো করে এর পরে ইচ্ছা হলে ‘একাকী’ হাত তুলে মুনাজাত করতে পারেন। অথবা ফরয, সুন্নত সব সালাত শেষ করে এরপরে মুনাজাত করবেন। উত্তম হচ্ছে সালাতের পরে নয়, বরং সালাতের ভেতরেই বিভিন্ন স্থানে (যেমন সিজদাতে, দুই সিজদার মাঝখানে, দুয়া মাসুরাসহ এমন সাতটি জায়গা আছে সালাতের ভেতরে, যেখানে দুয়া করা যায়), সেই জায়গাগুলোতে দুয়া করা। কারণ সালাতের ভেতরের দুয়াগুলো বেশি কবুল হয় ও আল্লাহ পছন্দ করেন। আল্লাহ বলেন, “তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করো।” উল্লেখ্য, অনেকে মনে করেন সালাতের পরে মুনাজাত করতেই হবে। এটা ঠিক নয়, সালাতের পরে আপনার ইচ্ছা হলে মুনাজাত করবেন, ইচ্ছা না হলে করবেন না, আপনার ব্যক্তিগত ইচ্ছা। মুনাজাত করা সালতের কোন অংশ নয়। সালাম ফেরানোর মাধ্যমেই আপনার সালাত শেষ হয়ে যায়। (২) ওযু অবস্থায় পশ্চিম দিকে ফিরে দুয়া করা মুস্তাহাব বা উত্তম। তবে এটা ফরয কিংবা জরুরী নয়। ওযু ছাড়াও এবং পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ, যেকোন দিকে ফিরেও মুনাজাত করা যায়। (৩) মুনাজাতের সময় দুই হাত তোলা মুস্তাহাব। আল্লাহ এটা পছন্দ করেন যে তাঁর বান্দা-বান্দীরা ভিক্ষুকের মতো তাঁর সুমহান দরবারে অত্যন্ত বিনীতভাবে কাকুতি-মিনতি সহকারে দুই হাত তুলে আন্তরিকভাবে দুয়া করবে। এইভাবে দুয়া করলে আল্লাহ খুশি হন এবং সেই দুয়া কবুল করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের রব লজ্জাশীল ও দানশীল। তাঁর বান্দা যখন তাঁর নিকট দুই হাত তুলে প্রার্থনা করে, তখন তিনি তাদেরকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন।” তিরমিযী, আবু দাউদ, বুলুগুল মারামঃ ১৫৮১। (৪) মুনাজাতের সময় হাত তোলার নিয়মঃ আল্লামাহ বাকর বিন আবু যাইদ রহি’মাহুল্লাহ বলেন, “মুনাজাতকারী তার দুই হাত বাহু বরাবর বা তার কাছাকাছি এমনভাবে উঠাবে যেন তার দুই হাত মিলিত অবস্থায় থাকে, দুই হাতের মাঝখানে কোন ফাঁক না থাকে। হাতের তালু আকাশের দিকে থাকে এবং হাতের পিঠ যমীনের দিকে। চাইলে উভয় তালু চেহারার সম্মুখে রাখবে এবং হাতের পৃষ্ঠদেশ কিবলামুখী করবে এবং দুই হাত যেন পাক-সাফ থাকে, খোলা থাকে কোনো কিছু দ্বারা আবৃত না থাকে।” তাসবীহুদ-দুয়াঃ ১১৫-১১৬, ফাতহুল বারীঃ ২/৫১৭-৫১৮, শারহুল আযকারঃ ৭/২৪৭। (৫) মুনাজাত করতে হবে বিনীত ভাবে, নিচু স্বরে, মনে এই দৃঢ় আশা ও প্রত্যয় নিয়ে যে, আল্লাহ সমস্ত বিষয়ের উপরে ক্ষমতাবান এবং তিনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন, সুতরাং নিশ্চয়ই তিনি আমার দুয়া কবুল করবেন। “আমি এতো পাপী আল্লাহ আমার দুয়া করবেন কিনা? আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন, নাকি করবেন না? মনে এইরকম কোন সন্দেহ নিয়ে অথবা আল্লাহ আমার দুয়া কবুল করবেন না, আমাকে মাফ করবেন না” – আল্লাহ সম্পর্কে এমন খারাপ ধারণা নিয়ে দুয়া করলে আল্লাহ সেই দুয়া সত্যিই কবুল করেন না। বান্দা যতই পাপী বা অন্যায়কারী হোক না কেনো, সে আন্তরিকভাবে তোওবা করে জান্নাতুল ফিরদাউসের আশা রেখেই দুয়া করবে, বিপদ যত বড়ই হোক আল্লাহ সব ইচ্ছা পূরণ করতে পারেন, এই আশা নিয়েই দুয়া করতে হবে। আর যেই দুয়া করা হচ্ছে সেইদিকে মনোযোগ রেখে, বুঝে শুনে আল্লাহর কাছে চাইতে হবে। উদাসীন হয়ে বা অন্তর থেকে না চেয়ে শুধু মুখে যন্ত্রের মতো বা তোতাপাখির মতো উচ্চারণ করে গেলে, বা আন্তরিক দুয়া না করে লোক দেখানো দুয়া করলে, আল্লাহ সেই দুয়া কবুল করেন না। মনে আশা ও ভয় নিয়ে মনোযোগীতার সহিত কান্নাকাটি করে দুয়া করলে আল্লাহ অত্যন্ত খুশি হন এবং বান্দার দুয়া কবুল করেন। (৬) মুনাজাতের প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা দিয়ে শুরু করা উচিত। আল্লাহর প্রশংসা এভাবে করা যেতে পারে التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ، وَالصَّلَواتُ، وَالطَّيِّباتُ، উচ্চারণঃ আত্তাহি’য়্যা-তু লিল্লা-হি ওয়াস-সালাওয়া-তু ওয়াত্তয়্যিবা-ত। অর্থঃ সমস্ত অভিবাদন, সকল সালাত ও পবিত্র কাজ শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য। অথবা, এটা বলেও আল্লাহর প্রশংসা করা যাবে, الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ উচ্চারণঃ আলহা’মদুলিল্লাহি হা’মদান কাসীরান ত্বায়্যিবান মুবা-রাকান ফীহ। অর্থঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যে প্রশংসা পবিত্রতা ও বরকতপূর্ণ। অথবা এটা বলে আল্লাহর প্রশংসা করা যাবে – الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ উচ্চারণঃ আলহা’মদু লিল্লাহি রাব্বিল আ’লামিন। অর্থঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক। এভাবে এক বা একাধিক আল্লাহর জন্য প্রশংসামূলক বাক্য দ্বারা মুনাজাত শুরু করা উত্তম। (৭) আল্লাহর প্রশংসার পরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দুরুদ ও শান্তির জন্য দুয়া পড়তে হবে। সহীহ হাদীসে বর্ণিত ছোট-বড় যেকোন দুরুদ পড়া যাবে, আপনার যেটা ভালো লাগে সেটা পড়বেন। সর্বোত্তম দুরুদ হচ্ছে দুরুদে ইব্রাহীম, যেটা আমরা সালাতে পড়ি। এটা না পড়ে ছোট অন্য দুরুদও পড়া যাবে। যেমন- اللَّهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ عَلَى نَبَيِّنَا مُحَمَّدٍ উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা সল্লি ওয়া সাল্লিম আ’লা নাবিয়্যিনা মুহা’ম্মাদ। অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি আমাদের নবী মুহাম্মাদের উপর সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন। সহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীবঃ ১/২৭৩। একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম দেখলেন, এক ব্যক্তি দুয়া করছে কিন্তু সে দুয়াতে আল্লাহর প্রশংসা ও রাসুলের প্রতি দরূদ পাঠ করেনি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে লক্ষ্য করে বললেন, “সে তাড়াহুড়ো করেছে।” অতঃপর সে আবার প্রার্থনা করল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে অথবা অন্য কাউকে বললেন, “যখন তোমাদের কেউ দুয়া করে তখন সে যেন প্রথমে আল্লাহ তাআ’লার প্রশংসা ও গুণগান দিয়ে দুয়া শুরু করে। অতঃপর রাসুলের প্রতি দুরুদ পাঠ করে। এরপর তার যা ইচ্ছা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে।” আবু দাউদঃ ১৪৮১, তিরমিজীঃ ৩৪৭৭, শায়খ আলবানীর মতে হাদীসটি সহীহ। (৮) এর পরে নিজের পছন্দমতো নিজের জন্য ও অন্যের জন্য, দুনিয়া বা আখেরাতের যেকোন কল্যানের জন্য দুয়া করতে হবে। প্রথমে নিজের গুনাহ মাফের জন্য, নিজের দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যানের জন্য দুয়া করতে হবে। এরপর নিজের বাবা-মা, নিজ পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও অন্য মুসলমান পুরুষ ও নারীদের জন্য দুয়া করা ভালো। সবচাইতে কম কথায় সবচাইতে বেশি প্রার্থনা করার এই দুয়াটা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম খুব বেশি বেশি করতেন। “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অধিকাংশ দুয়া হতঃ رَبَّنَآ اٰتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَّفِي الْاٰخِرَةِ حَسَـنَةً وَّقِنَا عَذَابَ النَّارِ উচ্চারণঃ রব্বানা আ-তিনা ফিদ্দুনিয়া হা’সানাতাওঁ-ওয়াফিল আ-খিরাতি হাসানাতাওঁ ওয়া-ক্বিনা আ’যাবান-নার। অর্থঃ হে আল্লাহ! আমাদেরকে দুনিয়ার জীবনে কল্যাণ দাও এবং পরকালে জীবনেও কল্যাণ দান করো। আর আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে বাঁচাও। বিঃদ্রঃ এই দুয়াটা “আল্লাহুম্মা আতিনা…” বা “রাব্বানা আতিনা…”, এই দুইভাবেই পড়া যায়। এছাড়া নিজের জীবিত/মৃত পিতা-মাতার জন্য এই দুয়া সর্বদা বেশি করে পড়তে হবেঃ رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا উচ্চারণঃ রব্বির হা’ম-হুমা কামা রাব্বা ইয়ানি সগিরা। অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি আমার পিতা-মাতার প্রতি তেমনি দয়া করো, যেইরকম দয়া তারা আমাকে শিশু অবস্থায় করেছিল। (৯) আরবী বা বাংলায় যেকোন ভাষাতেই মুনাজাত করা যায়, আল্লাহ সকল ভাষাই বোঝেন। তবে সালাতের ভেতরে উত্তম হচ্ছে ক্বুরআন ও হাদীসের দুয়াগুলো আরবীতে মুখস্থ করে সেইগুলো দিয়েই দুয়া করা। যেমন রিযক বা টাকা-পয়সা, রোগ থেকে মুক্তি বা সুস্থতা এমন অনেকগুলোর জন্য এই দুয়াটি দুই সিজদার মাঝখানে, সিজদাতে সিজদার তাসবীহ পড়ার পরে বা দুয়া মাসুরা হিসেবে পড়লেই হবে, اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي، وَارْحَمْنِي، وَاهْدِنِي، وَاجْبُرْنِي، وَعَافِنِي، وَارْزُقْنِي، وَارْفَعْنِي উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মাগফিরলী, ওয়ারহা’মনী, ওয়াহদিনী, ওয়াজবুরনী, ওয়াআ’ফিনি, ওয়ারযুক্বনী, ওয়ারফা’নী। অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, আমার প্রতি দয়া করুন, আমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন, আমার সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি পূরণ করে দিন, আমাকে নিরাপত্তা দান করুন, আমাকে রিযিক দান করুন এবং আমার মর্যাদা বৃদ্ধি করুন। আবু দাউদঃ ৮৫০, তিরমিযী ২৮৪, ইবন মাজাহঃ ৮৯৮। শায়খ আলবানীর মতে হাদীসটি সহীহ। উল্লেখ্য, সালাতের ভেতরে দুয়া করলে হাত তুলতে হবেনা, কারণ তখনতো আপনি সালাতে মাঝেই আছেন। সিজদায় গিয়ে প্রথমে সিজদার তাসবীহ পড়বেন, এর পরে অন্য দুয়া করতে পারবেন। আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী যেকোন সিজদাতেই দুয়া করতে পারবেন, নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নেই। আরবী ভাষা না জানলে নফল ও সুন্নত সালাতে বাংলা বা অন্য ভাষাতে দুয়া করা যাবে, ইন শা আল্লাহ, কোন সমস্যা নেই। তবে সতর্কতাবশত ফরয সালাতে অন্য ভাষায় দুয়া না করে শুধুমাত্র আরবী দুয়াগুলো করাই নিরাপদ। (১০) দুয়া করা শেষ হলে ‘আমিন’ অথবা ‘আমিন ইয়া রাব্বাল আ’লামীন’ বলবেন। আমীন অর্থ হচ্ছে, “হে আল্লাহ তুমি আমার দুয়া কবুল করো”। (১১) সর্বশেষ, পুনরায় নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দুরুদ পড়ে ও আল্লাহর প্রশংসা দিয়ে মুনাজাত শেষ করবেন। (১২) দুয়া শেষে হাত দিয়ে মুখ মোছা নিয়ে কোন একটি ‘সহীহ’ হাদীস নেই। ইমাম মুহাম্মাদ নাসির উদ্দীন আলবানী রহি’মাহুল্লাহ বলেছেন, “মুখে হাত মোছা নিয়ে যেই হাদিসগুলো এসেছে তার একটাও সহীহ নয়।” একারণে একজন প্রখ্যাত হানাফী আলেম, ইমাম ই’জ্জ ইবনে আব্দুস সালাম রহি’মাহুল্লাহ এই কাজের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, “একমাত্র জাহেল লোক ছাড়া আর কেউ মুনাজাতের পরে হাত দিয়ে মুখ মোছেনা।” ফাতওয়া ই’জ্জ ইবনে আব্দুস সালামঃ পৃষ্ঠা ৪৭। নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম মুনাজাত শেষে হাত দিয়ে মুখ মুছতেন; এটা বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা প্রমানিত হয়নি। তাই এই কাজ না করাই উত্তম। কারণ ইবাদতের কোন কিছু ক্বুরআন ও সহীহ হাদীসের প্রমান ছাড়া করা যায়না। মুনাজাত শেষ করে আমিন বলে হাত নামিয়ে ফেলবেন। উৎসঃ এই লেখাটা ইমাম আব্দুল আ’জিজ ইবনে বাজ রাহিমাহুল্লাহর একটি ফতোয়ার উপর ভিত্তি করে লেখা। লেখাটির সাথে সহীহ হাদীসের উপর ভিত্তি করে আমি কিছু ব্যখ্যা-বিশ্লেষণ ও অন্যান্য আলেমদের কথা সংযোজন করেছি। আপনারা দুয়া ও মুনাজাত নিয়ে বিস্তারিত জানার জন্য শায়খ আব্দুল হা’মীদ মাদানীর লিখিত “সহীহ দুয়া ঝাড়ফুঁক ও যিকর”, এই বইটা পড়ুন।
যে ব্যক্তি সকালে তিনবার রাতে তিনবার এই দোয়া পাঠ করবে কোনো কিছু তার ক্ষতি করতে পারবে না
যে ব্যক্তি সকালে তিনবার রাতে তিনবার এই দোয়া পাঠ করবে কোনো কিছু তার ক্ষতি করতে পারবে না
সন্মান ও ক্ষমতার মালিক আল্লাহ
সমকামীতা ইসলামে একটি গুরুতর অপরাধ আর সমকামীতার কারণে লুত সম্প্রদায় ধবংস হয়েছে। মহান আল্লাহর সতর্ক বাণী: إِنَّكُمْ لَتَأْتُونَ الرِّجَالَ شَهْوَةً مِنْ دُونِ النِّسَاءِ بَلْ أَنْتُمْ قَوْمٌ مُسْرِفُونَ অবশ্যই তোমরা (পুরুষেরা) পুরুষদের কাছে যৌন ইচ্ছা পূর্ণ করছো নারীদেরকে বাদ দিয়ে বরং তোমরা সীমালংনকারী সম্প্রদায়। (আল-আ‘রাফ, ৭/৮১) أَتَأْتُونَ الذُّكْرَانَ مِنَ الْعَالَمِينَ وَتَذَرُونَ مَا خَلَقَ لَكُمْ رَبُّكُمْ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ بَلْ أَنْتُمْ قَوْمٌ عَادُونَ দুনিয়ার সৃষ্টির মধ্যে তোমরাই কি পুরুষদের কাছে যৌন ইচ্ছা পূর্ণ করছো আর তোমাদের রব তোমাদের জন্যে যে স্ত্রীদেরকে সৃষ্টি করেছেন তোমরা তা বর্জন করছ বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়। (আশ্-শু‘আরা, ২৬/১৬৫-১৬৬) চরিত্রহীন সমকামীদের ব্যাপারে ইসলামের নির্দেশ হলঃ ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, مَنْ وَجَدْتُمُوهُ يَعْمَلُ عَمَلَ قَوْمِ لُوطٍ فَاقْتُلُوا الْفَاعِلَ وَالْمَفْعُولَ بِهِ তোমরা কাউকে লূত জাতির অনুরূপ কুকর্মে লিপ্ত পেলে তাকে এবং যার সাথে তা করা হয় তাকে হত্যা করো। (তিরমিযী, ১৪৫৬, ইবনে মাজাহ ২৫৬১, সহীহ)
Categories
Categories
Uncategorized
(533)
Archives
Nov 2023
Oct 2023
Sep 2023
Jul 2023
Jun 2023
Mar 2023
Feb 2023
Dec 2022
Sep 2022
Aug 2022
Jul 2022
Jun 2022
May 2021
Apr 2021
Mar 2021
Feb 2021
Dec 2020
Aug 2020
Jul 2020
Jun 2020
May 2020
Apr 2020
Feb 2020
Jan 2020
Dec 2019
Nov 2019
Oct 2019
Sep 2019
Aug 2019
Jul 2019
Jun 2019
May 2019
Apr 2019
Mar 2019
Feb 2019
Jan 2019
Dec 2018
Nov 2018
Oct 2018
Sep 2018
Aug 2018
Jul 2018
Jun 2018
May 2018
Apr 2018
Mar 2018
Feb 2018
Jan 2018
Dec 2017
Jul 2017
May 2017
Apr 2017
Jan 2017
Dec 2016
Nov 2016
Oct 2016
Sep 2015
May 2013
ফরিদপুরে এম্বুলেন্সের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৭ জন নিহত।
Share this:
Twitter
Facebook
Email
Like
Loading...
Calendar
May 2024
F
S
S
M
T
W
T
1
2
3
4
5
6
7
8
9
10
11
12
13
14
15
16
17
18
19
20
21
22
23
24
25
26
27
28
29
30
31
« Nov
Blogroll
Discuss
Get Inspired
Get Polling
Get Support
Learn WordPress.com
Theme Showcase
WordPress Planet
WordPress.com News
Privacy & Cookies: This site uses cookies. By continuing to use this website, you agree to their use.
To find out more, including how to control cookies, see here:
Cookie Policy
Subscribe
Subscribed
তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করো না এবং জেনে শুনে সত্য গোপন করো না।" (সূরা বাকারাঃ আয়াত ৪২)
Sign me up
Already have a WordPress.com account?
Log in now.
তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করো না এবং জেনে শুনে সত্য গোপন করো না।" (সূরা বাকারাঃ আয়াত ৪২)
Customise
Subscribe
Subscribed
Sign up
Log in
Copy shortlink
Report this content
View post in Reader
Manage subscriptions
Collapse this bar
%d